রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১১

" যমালয়"

বিষয়ঃ"মঞ্চ নাটক"

 

যমালয়


"যমালয়""            লিখেছেনঃ যাদব সূত্রধর

(১ম দৃশ্য)
"ঠাকুর মশাইয়ের বাড়ি"

(মঞ্চে প্রবেশ করবেন ঠাকুর মশাই)

ঠাকুরঃ মাগো মা কালী,তুমি সব জানো মা,আমি
কিছুই জানিনা,ওহে কালীচরন কই গেলি
(কালীচরনের প্রবেশ)
কালিঃ আজ্ঞে ঠাকুরমশাই,আমার নামতো কালী
চরণ না, আমার নাম সুকান্ত
থাকুরঃ না না না, এখন থেকে তোমার নাম হবে
কালীচরণ

কালিঃ কেন ঠাকুরমশাই ?
ঠাকুরঃ একথাও বুঝনা!! তা শুনো,আমি ঠাকুর
মশাই হওয়ার পর থেকে সব সময়
আমার সাথে কে থাকে ?
কালিঃ আজ্ঞে আমি,
ঠাকুরঃ সব সময় কারে ডাকতে হয়?
কালিঃ আজ্ঞে আমাকে,
ঠাকুরঃ এইতো লাইনে আসছো, ঘটনা হলো,
আমি এক ঢিলে দুই পাখী শিকার করতে
চাই,
কালিঃ দুই পাখী!!!কেমনে ঠাকুর মশাই?
ঠাকুরঃ ওহে বাবা কালীচরণ
কালিঃ আজ্ঞে ঠাকুর মশাই?
ঠাকুরঃ এইতো তুমি আমার ডাক সুনলে,আর
অন্য দিকে মা কালীও সন্তুষ্ট হয়ে গেলেন
যতবার তোমাকে ডাকবো ততবার মা কালী
সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন,
কালীঃ এ কি ঠাকুরমশাই মা কালীকে ডাকতেও
আপনি ছলচাতুরি করছেন!!!!!!
ঠাকুরঃ আরে না তুমিতো দেখছি মূর্খ, কোন
উপলক্ষে কিভাবে ডাকলাম, সেটা বড়
কথা না, ডাকটাই আসল,
কালীঃ ঠিক আছে আপনার কথা মানলাম,কিন্তু
আপনিতো আমারে মা কালী বলে ডাকেন-
না, ডাকেন বাবা কালী, তা কেমনে হল?
ঠাকুরঃ ওই যে আগে বললাম, কিভাবে ডাকলে
সেটা বড় কথা না, ডাকটাই আসল,
কালীঃ ও ঠাকুরমশাই আপনি এতো কিছু
জানেন!!
ঠাকুরঃ জানবোনা কেনোরে আমিযে পণ্ডিতের ও
পণ্ডিত,
কালীঃ আপনার মাথায় অনেক বুদ্দি!!
ঠাকুরঃসব মা কালীর ইচ্ছে, মা সরস্বতী আমাকে
জ্ঞ্যান দিয়েছেন, তাইতো আমার এক মাত্র
মেয়ের নাম রেখেছি সরস্বতী,আমি যতবার
আমার মেয়েকে ডাকবো,ততবার মা সরস্বতী
সন্তুষ্ট হবেন,
কালীঃমা সরস্বতী মাগো আমার ঠাকুর মশাইয়ের
মাথায় আরও জ্ঞ্যান দাও মা,
ঠাকুরঃশুন আরও কথা আছে,আমার তিন ছেলে
বড় ছেলের নাম রেখেছি রামচন্দ্র, আর
মেঝো ছেলের নাম রেখেছি কংস,
কালীঃকংস!!! সর্বনাশ করেছেন ঠাকুরমশাই,
ঠাকুরঃআরে না,ওই মেঝো ছেলেটা খুব সয়তান
তাই সয়তান কংসের নামানুসারে তার
নাম রেখেছি কংস,
কালীঃ আর আপনার ছোট ছেলের নাম কি?
ঠাকুরঃ আমার ছোট ছেলের নাম রেখেছি
কৃষ্ণচন্দ্র,এখন প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে
উঠে যদি আমি আমার পুত্র-কন্যাদের-
ডাকি তাহলে ভগবান সহ স্বর্গের সব দেব
দেবীরা সন্তুষ্ট হয়ে আমার উপর পুস্প
বর্ষণ করতে থাবেন,
কালীঃ হায় হায়,আপনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে
ডাকতেও ছলচাতুরি করছেন!!!আমি
আপনার সাথে আর থাকবনা ঠাকুর -
মশাই, এই এখনি চলে যাবো,
ঠাকুরঃ যাও যাও, অনাহারে মরবে,আমার সাথে
এতদিন ছিলে,তাই ভালো ভালো খেয়েছ,
সাথে আমার যজমানের ফ্রি ভক্তিও একটা
পেয়েছ, তাতেও আরাম পাওনি,যাও,যাও
কালীঃ ঠাকুরমশাই কথাটা খারাপ বলেননি,-
না আমি যাবোনা,আমি আপনার সাথে
থাকবো,
ঠাকুরঃ তা তোমাকে যেতে কে বলেছে!!থাকো
সব মা কালীর ইচ্ছে,মা কালী,পাপিষ্ঠ দূর
করহে মা,
কালীঃ পাষণ্ড বিনাশ করো,
ঠাকুরঃ ওহে বাবা কালীচরণ,
কালীঃ আজ্ঞে ঠাকুরমশাই ?
ঠাকুরঃ এতোক্ষন কথা বলে আমার খুব খিদে
পেয়েছে,
কালীঃ তা কি সেবা করবেন ঠাকুরমশাই ?
ঠাকুরঃ হেঃহেঃহেঃ পুরাতন অভ্যাসতো ছারতে
পারিনা,তুমি হোটেলে যাও, গিয়ে আমার
জন্য শিঙারা নিয়ে আসো,
কালীঃআজ্ঞে ঠাকুরমশাই আপনি শিঙারা খাবেন!
এটাতো বিধর্মীর হাতে তৈরি !!!!
ঠাকুরঃ তা কী হল ?
কালীঃ সেদিন আপনার সাথে বিয়েতে গেলাম
সেখানে আপনি আমাকে মাংস দিয়ে খেতে
দেননি!! আর আজ বলছেন শিঙারা খাবেন!
ঠাকুরঃ মূর্খ,এটাও বুঝোনা, সেটা ছিল সমাজ,
সামাজিকতা রাখতে হয়, তুমি যাও শিঙারা
নিয়ে আসো,মা কালী মাগো পাপিষ্ঠ দূর
করহে মা,
কালীঃ পাষণ্ড বিনাশ করো,
ঠাকুরঃ কালী চরণ আমি হাতমুখ ধুতে গেলাম
তুমি তাড়াতাড়ি যাও,
(ঠাকুরমশাইয়ের প্রস্থান)
কালীঃ মা কালী তুমি জানো মা এ কোন পাপিষ্ঠ
এর সাথে আমি বিচরণ করছি, আমায়
ক্ষমা করো মা, আমি পেটের দায়ে বিপদে
আছি,

***পর্দা****

(এটা শুধুই একটা গল্প, কারো সাথে মিলে গেলে তা অনিচ্ছাক্রিত কাকতাল মাত্র)

..........................................................চলবে

২টি মন্তব্য: