বিষয়ঃ "জীবনী "
(আর সি কর্মকার এর বই অবলম্বনে) লিখেছেনঃ যাদব সূত্রধর
(আর সি কর্মকার এর বই অবলম্বনে) লিখেছেনঃ যাদব সূত্রধর
বাংলার ধুমকেতু
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম
১৫ ডিসেম্বর ১৯২৯ কলকাতা আলবার্ট হলে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে জাতীয় সংবর্ধনা দেয়া হয়। এদিন প্রধান অতিতির ভাষণে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু বলেন, “আমরা যখন যুদ্ধে যাব তখন সেখানে নজরুলের যুদ্ধের গান গাওয়া হবে, আমরা যখন কারাগারে যাব, তখনও তার গান গাইব’ ।
সেদিনের সুভাষ বসুর ভবিষ্যৎ বাণী অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে বাঙালি জাতি। বাংলার দামাল ছেলেরা কণ্ঠে নজরুলের গান ধরে অসীম সাহসী যোদ্ধার বেশে সুভাষ বসুর মতো বীর সেনাপতি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেত্রিত্তে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেত্রিত্তে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনে।
১৯৭১ সাল, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ছাত্র-কৃষক-শ্রমিক সহ এদেশের আবাল-বৃদ্ধ- বনিতা অংশ নেয়, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তখন বেজে উঠে নজরুলের সংগ্রামী গান তার মধ্যে অন্যতম-
“কারার ঐ লৌহ কপাট
ভেঙ্গে ফেল করবে লোপাট”
“ঐ নতুনের কেতন উড়ে
কাল বৈশাখীর ঝর
তোরা সব জয় ধ্বনিকর”।
“মোরা ঝর্ণার মতো উদ্দাম
মোরা ঝর্ণার মতো চঞ্চল
মোরা বিধাতার মতো নির্ভয়
মোরা প্রকৃতির মতো সচ্ছল”।
“শিকল পরা ছল মোদের শিকল পরা ছল
এই শিকলে পরে তোদের করবোরে বিকল”।
এই গানগুলি অসংখ্যবার বাজানো হয়েছে। গানগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকেত্রে অসীম প্রেরণা যুগিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম নজরুল জয়ন্তী পালন উপলক্ষে প্রদত্ত বাণীতে শেখ মুজিব যথার্থই উচ্চারন করেন “নজরুল বাংলার বিদ্রোহী আত্না ও বাঙ্গালীর স্বাধীন ঐতিহাসিক সত্ত্বার রুপকার”।
তার এই বিখ্যাত গান –
“চল চল চল
ঊর্ধ্বে গগণে বাজে মাদল
নিন্মে উত্তলা ধরণী তল
অরুন প্রাতের তরুন দল
চলরে চলরে চল”
গানগুলিকে সরকার আমাদের রণ সঙ্গীতের মর্যাদা দিয়েছে।
কাজী নজরুল ইসলাম একমাত্র ব্যাক্তিত্ত জিনি এই উপমহাদেশে সর্ব প্রথম ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অকুতোভয়ে, উন্নতশিরে ও উচ্চকণ্ঠে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং বলেন- ভারতবর্ষের এক পরমানু অংশও বিদেশীদের অধীনে থাকবেনা। ভারতবর্ষের সম্পূর্ণ দায়িত্ব, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রক্ষা, শাসনভার, সমস্থ থাকবে ভারতীয়দের হাতে।
নজরুল “বিদ্রোহী” কবিতা রচনা করে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠেন, যেমন –
বল বীর-
বল উন্নত মম শির !
শির নেহারি” আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির !
বল বীর –
বল- মহাবিশ্বের মহাকাশ ফারি”
চন্দ্র সূর্য গ্রহতারা ছাড়ি”
ভূলোক-দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন “আরশ” ছেদিয়া
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাএীর!
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটিকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
বল বীর –
আমি চির উন্নত মম শির”।
নজরুলের কবিতা কবি রবীন্দ্রনাথকেও নাড়া দিয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ নজরুলকে কবি সম্বোধন করেছিলেন এবং বসন্ত গীতি নাট্য কবির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছিলেন।
চলবে...............
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন